পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং অন্যান্য গোষ্ঠী স্বাধীন বেলুচিস্তানের দাবিতে কয়েক দশক ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে সাধারণত পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী, সরকারি স্থাপনা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা থাকে।
সম্প্রতি, ১৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে, বেলুচিস্তানের নোশখি জেলায় আধা-সামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে হামলায় পাঁচ সৈন্য নিহত এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। বিএলএ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এর আগে, ১৬ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে, কালাত জেলার একটি তল্লাশি চৌকিতে হামলায় সাত সৈন্য নিহত এবং ১৮ জন আহত হন। এই হামলার দায়ও বিএলএ স্বীকার করে।
এই পরিস্থিতিতে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে সামগ্রিক সেনা অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই অভিযানের লক্ষ্য বেলুচিস্তানে সক্রিয় মাজিদ ব্রিগেড, বিএলএ, বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) এবং বেলুচ রাজি অজয় সাঙ্গার (বিআরএএস) গোষ্ঠীগুলোকে নির্মূল করা।
বেলুচিস্তান প্রদেশটি খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ, যেখানে সোনা, তামা এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে। এছাড়া, চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডরের (সিপিইসি) গুরুত্বপূর্ণ গোয়াদর বন্দরও এই প্রদেশে অবস্থিত। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অভিযোগ করে যে, এই সম্পদের সঠিক বণ্টন না হওয়ায় এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে তাদের উপেক্ষা করা হচ্ছে, যা তাদের আন্দোলনের প্রধান কারণ।
সাম্প্রতিক হামলাগুলোর পর, পাকিস্তান সরকার বেলুচিস্তানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে, এই সংঘর্ষের ফলে প্রদেশটির স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে প্রভাব পড়ছে।